আর্টিকেল লেখার নিয়ম

আর্টিকেল লেখার নিয়ম জানার জন্য আপনাকে খুব বেশি দক্ষ হতে হবে না। তবে মান সম্মত আর্টিকেল লেখার জন্য অবশ্যই আপনাকে উক্ত বিষয় ভালো করে স্টাডি করতে হবে। বলা হয়ে থাকে – কনটেন্ট রাইটিং ইজ কিং। 


আর্টিকেলের শুরুতেই যদি পাঠকের মন জয় করে নেয়া যায়। তাহলে পাঠক আপনার ওয়েবসাইটে অন্যান্য আর্টিকেল ঘুরে দেখার সম্ভাবনা বাড়বে। 

ফোকাস কিওয়ার্ড নির্বাচন করুন

পাঠকগণ নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে আর্টিকেল পড়ার চেয়ে বরং গুগল এ সার্চ করে আর্টিকেল পড়তে পছন্দ করে। প্রথমে ভিজিটর যে বিষয়ে জানতে চায়, সে বিষয়ে গুগলে সার্চ/অনুসন্ধান করে। সার্চ রেজাল্টের প্রথম দিকের কয়েকটি আর্টিকেল সে পড়ে। বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে জানা যায় যে, পাঠকেরা কোন বিষয়ে গুগলে বেশি সার্চ করতেছে। তাই আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে, যে বিষয়ে গুগলে বেশি সার্চ হচ্ছে এমন ২/৩ টি বিষয়কে ফোকাস কিওয়ার্ড হিসেবে নির্বাচন করতে হবে।মনে রাখবেন, আপনার ফোকাস কিওয়ার্ড এর চাহিদা যত বেশি হবে। সার্চ ইঞ্জিন গুলোর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট বা আর্টিকেলের ভিজিটর সংখ্যা তত বৃদ্ধি পাবে।

এজন্য আর্টিকেল লেখার নিয়ম এর মধ্যে ফোকাস কিওয়ার্ড নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ফোকাস কিওয়ার্ড যেন আর্টিকেলে বেশ কয়েকবার থাকে সেটি নিশ্চিত করুন। এক্ষেত্রে ২০০ শব্দের মধ্যে অন্তত ১ বার কিওয়ার্ড রাখুন। তবে আর্টিকেল যদি ৩০০/৪০০ শব্দের হয়। তাহলে ১০০ শব্দের মধ্যে একবার কিওয়ার্ড রাখুন।

আকর্ষণীয় আর্টিকেলের টাইটেল নির্বাচন করুণ

আপনি যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখতে চাচ্ছেন, তার অবশ্যই একটি টাইটেল বা শিরোনাম রয়েছে। আপনাকে চিন্তা করে এই টাইটেল বা শিরোনাম নির্বাচন করতে হবে। দেখা যায় যে, প্রতি ১০ জন পাঠকের মধ্যে ৮ জন পাঠকই যদি টাইটেল পছন্দ না হয়। তাহলে আর্টিকেলটি না পড়ে অন্যত্র চলে যায়। এজন্য আপনি আর্টিকেলে কি লিখেছেন তা অল্প কথায় টাইটেলের মধ্যে উল্লেখ করুন।

খেয়াল রাখুন যেন পাঠকবৃন্দ টাইটেলটি পছন্দ করে। আর্টিকেলের শিরোনাম যেন ৫ থেকে ১০ শব্দের মধ্যে হয়। দেখতে দৃষ্টিনন্দন হয় এবং অবশ্যই ফোকাস কিওয়ার্ড সমৃদ্ধ হয়। আর্টিকেল লেখার নিয়ম এর মধ্যে আকর্ষনীয় শিরোনাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কপিরাইট এড়িয়ে চলুন

ভালোভাবে আর্টিকেল লেখার নিয়ম হচ্ছে আপনার আর্টিকেলের মধ্যে সংযুক্ত ছবি ও লেখা যেন কপিরাইট মুক্ত হয়। ভালোভাবে সেদিকে খেয়াল রাখুন। আমরা অনেক সময় সরাসরি গুগল সার্চ করে ছবি ডাউনলোড করে আর্টিকেলের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেই। কিন্তু যাদের ছবি ডাউনলোড করেছি তারা হয়তো এই ছবিটি সকলের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় নাই।

এ ধরনের ছবি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। নিজে ডিজাইন করার চেষ্টা করুন। নিজের তোলা ছবি ব্যবহার করুন। অথবা গুগলে সার্চ করার পরে “ ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্স”এর আওতায় থাকা ছবিগুলো ব্যবহার করুন। আর্টিকেলের লেখা যেন পুরোটাই আপনার হয়। অন্য জায়গা থেকে কপি করা থেকে বিরত থাকুন। কপি করা আর্টিকেল আপনার ওয়েবসাইটে রাখতে পারবেন তবে গুগল থেকে কখনো এডসেন্স এপ্রুভ বা মনিটাইজেশন পাবেন না।

আর্টিকেলে ভূমিকা যুক্ত করুন

মূল আর্টিকেল লেখা শুরু করার আগে চার-পাঁচ লাইনের একটি ভূমিকা যুক্ত করুন। ভুমিকা অংশে সম্পূর্ণ আর্টিকেলে কি বিষয় আলোচনা হয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করুন। আর্টিকেল লেখার নিয়ম মেনে ভুমিকা লিখুন। এতে পাঠক আপনার আর্টিকেলের প্রতি আকৃষ্ট হবে।

দরকারি তথ্য দিন

অনেক সময় আমরা ওয়েবসাইটের আর্টিকেল সংখ্যা বাড়ানোর দিকে জোর দেই। ফলে আর্টিকেল এর ভেতরে প্রয়োজনীয় তথ্যের সংখ্যা কমে যায়। এতে করে পাঠক আমাদের ওয়েবসাইটের উপরে নির্ভরতা হারাবে। পরবর্তীতে সে আমাদের ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়তে আগ্রহী হবে না। এজন্য অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আর্টিকেল বড় করার চেয়ে যতটুকু দরকার ততটুকু তথ্য দিন।

আপনি যে বিষয় আর্টিকেল লিখতেছেন, সে বিষয় এর বাইরের কোনো তথ্য দেয়া থেকে বিরত থাকুন। পাঠক যেন আর্টিকেল পড়ার পরেই তার প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যায়, সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখুন। অনেক বড় আর্টিকেল হয়ে গেলে কয়েকটি আর্টিকেলে ভাগ করে লিখুন। তারপর এদেরকে পরস্পর সংযুক্ত করে দিন।

আর্টিকেল ফরম্যাটিং করুন

আর্টিকেল প্রকাশ করার সময় খেয়াল রাখুন যেন আর্টিকেল জাস্টিফাইড এলাইন থাকে। আপনার আর্টিকেলে যদি লাইন ছোট বড় হয় অর্থাৎ সেন্ট্রাল অ্যালাইন বা লেফট এলাইন থাকে তাহলে দেখতে খুব একটা ভালো লাগবে না। কাস্টমারকে আকৃষ্ট করার জন্য উপস্থাপনা সুন্দর হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পুরো আর্টিকেলটি একটি প্যারাগ্রাফ আকারে না লিখে বরং ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ এ ভাগ করে লিখুন। প্রতিটি প্যারাগ্রাফের ভেতরে কি আছে সে বিষয়ে একটি শর্ট হেডিং/সাব হেডিং দেওয়ার চেষ্টা করুন।

আর্টিকেল লেখার নিয়ম এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আর্টিকেলের শব্দ সংখ্যা যেন ৬০০ শব্দ থেকে বেশি হয়। ৩০০ শব্দের কম যেন না হয়। অবশ্যই সেদিকে খেয়াল রাখুন। লিংক এবং বাটন আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করুন। আকর্ষণীয় কালার বা ডিজাইন দেয়ার চেষ্টা করুন। তবে হযবরল কালার দেয়া থেকে বিরত থাকুন। ডাউনলোড করা যায় এমন পণ্যের ক্ষেত্রে ডাউনলোড লিংক সংযুক্ত করুন। আর্টিকেল গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করুন। আর্টিকেল লিখার নিয়ম এর মধ্যে এই নিয়মটি অশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

ইন্টারনাল লিংক আর্টিকেলের মধ্যে যুক্ত করুন

বলে রাখি ইন্টারনাল লিংক হলো- আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অন্যান্য আর্টিকেল এর লিংক। যাতে পাঠক একটি আর্টিকেল পড়ার সময় লিংকে ক্লিক করে অন্য আর্টিকেলটি পড়তে পারে। সুতরাং আপনি পাঠককে আপনার ওয়েবসাইট থেকে যত বেশি আর্টিকেল পড়াতে পারবেন ততই আপনার লাভ। এতে আপনি আর্থিক লাভবান হবেন পাশাপাশি আপনার ওয়েবসাইটের রিচ বাড়বে। এজন্য আর্টিকেলের ভেতরে আর্টিকেল রিলেটেড নিজস্ব ওয়েবসাইটের অন্য আর্টিকেলের দুটি থেকে তিনটি লিংক সংযুক্ত করুন। পাঠক লিংক থেকে ওই আর্টিকেলগুলো পড়লেও আপনার উপকার হবে।

স্ক্রিনশর্ট সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন

অনেক সময় টেক রিলেটেড আর্টিকেলে গুছিয়ে তথ্য উপস্থাপন করার জন্য স্ক্রিনশর্ট সংযুক্ত করা লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে স্ক্রিনশর্ট গুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে সংযুক্ত করুন। সম্পূর্ণ স্ক্রিনের ছবি না নিয়ে বরং প্রয়োজনীয় অংশের ছবি কেটে নিন। প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ অংশে ভিন্ন কালারের বর্ডার বা তীর চিহ্ন দিয়ে দেখিয়ে দিন। স্ক্রিনশর্ট থেকে অপ্রয়োজনীয় অংশ কেটে বাদ দিন। আর্টিকেল লেখার নিয়ম এর মধ্যে বুঝার সুবিধার্থে স্ক্রিনশর্ট ব্যবহার এর গুরুত্ব রয়েছে।

ফিচার ইমেজ ব্যবহার করুন

আপনার আর্টিকেলের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক এবং শিরোনাম সমৃদ্ধ একটি ফিচার ইমেজ যুক্ত করুন। অধিকাংশ ওয়েবসাইটে আর্টিকেলের পেইজে শুধুমাত্র ফিচার ইমেজ এবং শিরোনাম দেখায়। পরবর্তীতে এখানে ক্লিক করলে পুরো আর্টিকেল দেখা যায়। খেয়াল করুন আপনার পাঠকের কাছে প্রথমে কিন্তু ফিচার ইমেজ এবং শিরোনাম পৌঁছাচ্ছে। আপনি কত সুন্দর ফিচার ইমেজ তৈরি করতেছেন। তার ওপর ভিত্তি করে পাঠক আপনার আর্টিকেল পড়বে কিনা তা নির্ভর করতেছে। এজন্য দৃষ্টি নন্দন ফিচার ইমেজ তৈরি করুন। ফিচার ইমেজের ভেতরে আর্টিকেলের সাথে সম্পৃক্ত ছবি ব্যবহার করুন।

আর্টিকেলের শেষে উপসংহার দিন

আর্টিকেলের শেষে ৩-৪ লাইনের ছোট একটি প্যারাগ্রাফ সংযুক্ত করুন। এতে আপনি পুরো আর্টিকেল পড়ার পরে পাঠকের কাছ থেকে কি আশা করেন তা জানান। গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল হলে পাঠক যেন তার সোশ্যাল মিডিয়াতে আর্টিকেলটি শেয়ার করে সেজন্য অনুরোধ করুন। পাঠককে পুনরায় আপনার ওয়েবসাইট এর আর্টিকেল পড়ার জন্য আসতে বলুন। আপনি খুব শীঘ্রই আপনার আর্টিকেলগুলোতে কি সংযুক্তি আনছেন তা পাঠককে জানান।আর্টিকেল লেখার সময় এই নিয়ম গুলি খেয়াল রাখলে ৮০-৯০% পারফেক্ট আর্টিকেল লিখতে পারবেন। আজকের আর্টিকেল থেকে কিভাবে আর্টিকেল লিখতে হয়। তার ১০ টি নিয়ম কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না। আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন আপনার ব্যবহৃত সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে। এ ধরনের বিভিন্ন তথ্য পেতে প্রতিদিন আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরএম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url