আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৪

আলু একটি সবজি। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আলুর চাষ করা হয়। তবে অপেক্ষাকৃত উঁচু ও চাষযোগ্য জমিতে আরো ভালো জন্মায়। বাংলাদেশে আল উৎপাদনে সহায়ক পরিবেশ রয়েছে। সাধারণত আমন ধান কাটার শুরুতে এবং শীতকালীন মৌসুমে আলু চাষ করা হয়।
আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৪


ভূমিকা

আলু যাকে ইংরেজিতে potato বলে ডাকা হয়। বিভিন্ন রং ও জাতের সমন্বয়ে স্থান কাল পাত্রভেদে আলুর বিভিন্নতা রয়েছে। আলুর বৈজ্ঞানিক নাম solanum tuberosum।এর উদ্ভিদ পরিবারের শ্বেতসার সমৃদ্ধ একটি কন্দ।এটা স্থানীয় আমেরিকার একটি মূল সবজি। সেলোনসি নাইটশেড পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এই উদ্ভিদটি বহুবর্ষজীবী হয়ে থাকে।

আলু উৎপাদনে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে ইউরোপের দেশগুলো। জাত ও উৎপাদন বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করায় প্রশংসার দাবিদার ইউরোপের রাষ্ট্র নেদারল্যান্ড। হল্যান্ড জাতীয় আলু চাষে প্রথিকৃৎ রাষ্ট্রটি। চলুন জেনে নেওয়া যাক আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ও সম্ভাবনার নানা কথা।

আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৪

বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ রাষ্ট্র হওয়ায় এবং নদী বেষ্টিতো হওয়ায় এখানকার জলবায়ু চাষবাসের উপযোগী। পলল বেষ্টিত মাটি হওয়ায় শস্য উৎপাদনেও বাংলাদেশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের সবজি জনিত চাহিদায় সর্বোচ্চ স্থান দখল করে আছে আলু। সে আলু চাষে বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম এবং এশিয়ায় তৃতীয়।

বাংলাদেশের কেবল আলু একমাত্র সবজি যা উৎপাদনের পর উদ্বৃত্ত থাকে। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এক সার্ভেতে দেখানো হয়েছে যে, বাংলাদেশের উৎপাদিত আলুর পরিমাণ ১ কোটি ১১ লাখ ২৪ হাজার ৭০০ টন।যা আভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় ৭৫-৮০ লাখ টন বেশি। তবে উৎপাদনে সন্তুষ্টি থাকলেও রপ্তানিতে বাংলাদেশ অনেক পেয়েছি। 

উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর ৪ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।তবে উচ্চ জাতের স্বল্পতা ও উৎপাদন খরচের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ আলু রপ্তানিতে সুবিধা করতে পারছে না ।

মিষ্টি আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা

সারা বছরের বিভিন্ন সময়ে নানান রকম সবজি ও ফলমূল উৎপন্ন হয়। তবে বছরে বিভিন্ন সময় উঠে আসে সব ফল থেকেও দারুন পুষ্টি ও ভিটামিন পাওয়া সম্ভব। আপনি যে সব এলাকায় বসবাস করেন আপনার বসবাসের ধরন অনুযায়ী সব এলাকায় বছরের বিভিন্ন সময়ে যে সকল ফলগুলো পাওয়া যায় তা খাওয়া প্রয়োজন। এমনি মিষ্টি আলু একটি।

লালচে ও বেগুনি রঙের মিষ্টি আলু সবজি হিসেবে ও খাবারের রান্নায় বিভিন্ন পদ সৃষ্টি করা যায়। তবে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় যেমন সেদ্ধ করে, পুড়িয়ে অথবা বিভিন্ন খাবার সহযোগে আচারের মতো করেও এটি ব্যবহার করা যায়। পুষ্টিবিদদের মতে, মিষ্টি আলু পুষ্টিগুনে ভরপুর।মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন এ,ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম। 

যদিও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে তবু মিষ্টতা থাকায় এটি সীমিত পরিসরে খেতে হবে। যারা স্থুলতাই স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবছেন, কি করে ওজন কমাবেন, আর্থাইটিস সমস্যা সমাধানে, পাকস্থলীর নানা পীড়া যেমন আলসার প্রতিরোধে মিষ্টি আলু দারুণ উপকারী।

চলুন জেনে নেওয়া যাক মিষ্টি আলুর উপকারিতা সমূহ
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে।
  • হজমে সহায়।

মিষ্টি আলুর অপকারিতা 

  • কিডনিতে পাথর
  • মিষ্টি আলুতে অক্সালেট নামে একটি জৈব এসিড থাকে। যাদের কিডনিতে পাথর রয়েছে তাদের মিষ্টি আলু পরিহার করা উচিত।
  • ব্যথা বৃদ্ধিতে
  • মিষ্টি আলুতে থাকা অক্সালেট থাকে ব্যথা বাড়ায়। যাদের শরীরে ব্যথা রয়েছে ডায়েটে তাদের মিষ্টি আলু না রাখাই ভালো।
  • পেটে অসস্তি
  • মিষ্টি আলুতে ম্যানিটোল নামক উচ্চ কার্বোহাইড্রেট থাকে। যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে অত্যাধিক পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া, বদহজম,পেটফোলার মত পেটরোগ হতে পারে।
  • ডায়াবেটিস বাড়াতে
  • গবেষণায় দেখা গেছে মিষ্টি আলু ইনসুলিন এর মাত্রাকে বাড়িয়ে তোলে। তাই ডায়েটে মিষ্টি আলুর ব্যবহার ডায়াবেটিকস ঝুঁকি বাড়ায়।

রাঙা আলুর উপকারিতা

ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ফাইবার সমৃদ্ধ রাঙা আলু স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক উপকারী। যে সকল রাগ আলুর রং কমলা ও বেগুনি তাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। প্রদাহজনিত জ্বালা কমাতে রাঙা আলুর জুরি মেলা ভার। কর্কট রোগ বা ক্যান্সার, হৃদরোগ, আলসার প্রতিরোধে রাঙা আলুর কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে।

গোল আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা

আমাদের কাছে ভাত, রুটির পরে আলুর গুরুত্ব অনেক। এসব সবজিতে রয়েছে ফাইবার, জিংক, ক্যালসিয়ামরের মত অত্যাবশ্যকীয় উপাদান সমূহ। এছাড়া গোল আলুতে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফসফরাসের নানা পুষ্টিগুণে অনেক ভরপুর।
গোল আলুর উপকারিতা
  • হাড় ভালো রাখে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।
  • হজম ও পাকস্থলী সুস্বাস্থ্য রক্ষা করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • প্রদাহ জনিত ব্যথা লাগবে গোল আলু কার্যকরী।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • ডায়রিয়ায় গোল আলু উপশম দেয়।
  • মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি ও দুশ্চিন্তা রোধে ।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে।
  • গোল আলুর অপকারিতা বা ক্ষতি :
  • অতি আলু সেবন ডায়রিয়া হতে পারে।
  • সবুজ আলু অর্থাৎ কাঁচা আলুতে অ্যালকোলয়েড থাকে। স্যালেনিন, চ্যাকোনিন ও আর্সেনিক থাকায় বেশি পরিমাণে গোল আলু খেলে মারাত্মক রোগের উপস্থিতি দেখা দিতে পারে।
  • নষ্ট বা পচা আলু শরীরে বিষাক্ত প্রভাব ফেলে।
  • গর্ভাবস্থায় কাঁচা আলু যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন তবে আলুর ভাজা বা বেশি কষা আলু সমস্যা নেই।
  • যারা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন তারা আলু থেকে দূরে থাকুন। আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকে তাই তা ফ্যাটে প্রভাব ফেলে।
  • বর্তমানে উৎপাদিত আলু উৎপাদনে এবং সংরক্ষণে প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয় যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর । তাই খাবারে আলু কম রাখুন।

আলুর পুষ্টি উপাদান

যাদের প্রধান খাদ্য ভাত, রুটি তাদের কাছে আলু একটি পরিচিত নাম। নানা রকম পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজি।আলুতে উচ্চ শর্করা, প্রোটিন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, খনিজ পদার্থ সমূহ। এছাড়া নানান রোগে আলু উপকারী।

লেখকের মন্তব্য 

সম্মানিত পাঠক, গোল আলু ও মিষ্টি আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তৃত আকারে ধারনা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি বিভিন্ন রোগের প্রতিকার ও সুস্থ জীবন যাপনে ডায়েট হিসেবে আলুর উপকারিতা সংক্রান্ত এই আলোচনা আপনাদের বিশেষ উপকারে আসবে। আমাদের ব্লগটি ভালো লেগে থাকলে আমাদের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরএম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url