পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায়
আপনি যদি সৃজনশীল মানসিকতার হন তাহলে টিউশন,ফার্মিং, শিক্ষামূলক ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি থেকে আয় করতে পারেন। আপনার বেঁচে যাওয়ার সময় কে কাজে লাগাতে উপরোক্ত বিষয়ে যে কোন একটিতে যা আপনার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তা নিয়ে অবসর হতে পারেন। আশা করি এ পদক্ষেপ আপনার আয় ও সমৃদ্ধি থেকে খানিকটা বাড়িয়ে তুলবে।
ভূমিকা
আমাদের অনেকেই আছেন যারা পড়াশোনার পাশাপাশি একটি কাজ খুঁজছেন।যার মাধ্যমে সীমিত আয় করা যায়। আবার অনেকে আছেন কাজ করছেন। তবে আপনি যদি কর্মসন্ধানী বেকার হন তবে আপনার জন্য কিছু দিকনির্দেশনা রয়েছে। অধ্যাবসায়ের সময় যেটুকু সময় পড়াশোনার পাশাপাশি আপনার অতিরিক্ত থাকে তাকে কাজে লাগিয়ে আর্থিকভাবে খানিকটা উপকৃত হওয়া সম্ভব।আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর ব্যাপারে ধারণা রাখেন তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে ।
এছাড়া আপনি যদি সৃজনশীল মানসিকতার হন তাহলে টিউশন,ফার্মিং, শিক্ষামূলক ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি থেকে আয় করতে পারেন। আপনার বেঁচে যাওয়ার সময় কে কাজে লাগাতে উপরোক্ত বিষয়ে যে কোন একটিতে যা আপনার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তা নিয়ে অবসর হতে পারেন। আশা করি এ পদক্ষেপ আপনার আয় ও সমৃদ্ধি থেকে খানিকটা বাড়িয়ে তুলবে।
পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায়
শিক্ষা জীবনে একটা সময় আসে যখন কেউ স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করে। অল্প করে হলেও নিজের টাকায় শখ পূরণের চেষ্টা করে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণত ২০ বছর পার হলেই একজন ছাত্র আয় মূলক কাজের সাথে যুক্ত হতে চান। যাতে নিজের টাকায় বন্ধুবান্ধবের সাথে সৌখিন সময় গুলো কাটানো যায়। তার জন্য দিতে হবে না কোন জবাবদিহিতা,থাকবে না চাপ, থাকবে না কোন নির্ভরশীলতা।
তাই ২০ বছর পার হওয়ার সাথে সাথেই মাথায় আয়ের একটা চিন্তা চলে আসে। তবে কারো ক্ষেত্রে এর আগেও সংসারের হাল ধরতে হয়। ছাত্রজীবনে আয় করতে পারার আনন্দ এবং স্বাধীনতা তা যদি কেউ উপলব্ধি করে থাকেন তবে আয়ের সাথে জীবন ব্যয় করার ইচ্ছেটা প্রবল হয়ে ওঠে। যদি আপনি চিন্তা করে থাকেন পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু আয় করবেন। তবে এই লেখাটি আপনার জন্য।
নিচে আপনার জন্য রইল কিছু নির্দেশনা যা মেনে আপনার অবসর সময়গুলোতে আপনি সামান্য পরিসরে আয় করতে পারেন। ডাটা এন্ট্রি বা ভালো লেখালেখির মাধ্যমে ঘরে বসে মাসে ৫ হাজার থেকে ৮০০০ পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষানবিশ ছাত্র-ছাত্রীদের বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। চলুন, জেনে নেয়া যাক কোন কাজগুলো করলে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করা সম্ভব।
কনটেন্ট লেখালেখির মাধ্যমে
পড়াশোনার পাশাপাশি যদি আপনি ভালো লিখতে পারেন। হতে পারে কবিতা, গান, ছন্দ কিংবা গল্প উপন্যাসের মত বিষয় তবে এ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে চাইলেই মাসে হাত খরচের টাকা সহজে যোগাড় করতে পারেন। বহু কোম্পানি আপনার সৃজনশীল মেধাকে কাজে লাগিয়ে আয়মূলক কাজের সুযোগ করে দেয়।সমসাময়িক বিষয়গুলোতে যদি আপনার দক্ষতা ভালো থাকে তবে আপনি অনলাইন প্লাটফর্মে অনেক কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ বা Hiring যোগ দিতে পারেন।
টিউশনের মাধ্যমে
আমাদের দেশের অধিকাংশ ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া চলাকালীন সময়ে তাদের অবসর সময়গুলোকে কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার জন্য যেটুকু ভালো হয় ওই নির্ধারিত সময়টুকু টিউশন করাতে পারেন।সুবিধামত কোন একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে অথবা বাড়িতে গিয়ে পড়িয়ে আসতে পারেন। যা আপনার আয়ের একটি উৎস হতে পারে। বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ, ইউনিভারসিটির ছাত্র-ছাত্রী রা এ কাজের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। এ কাজের ফলে যেমন তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসে তেমনি পরিবারের উপরে চাপ কমে।
ছবি আঁকা অথবা গিটার প্লেয়িং করে
যদি আপনার ছবি আঁকার দক্ষতা ভালো হয় কিংবা ভালো গিটার বাজাতে পারেন। তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে ব্যাচ করে গিটার প্লেয়িং ক্লাস পড়াতে পারেন। তবে ছবি এঁকে অনলাইন মিডিয়া আপলোড করতে পারেন। অনেকে ছবি ক্রয় করেন। অথবা ব্যাচ করে ক্লাসের মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
ফেসবুকিং
ফেসবুক শুধুমাত্র গাল গল্প করার জন্য নয়। আপনি চাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন। ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাট কোম্পানি, এফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি করে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারেন।
ইউটিউবিং
আজকের আধুনিক বিশ্বে শিক্ষনীয় সমস্ত কাজের মাধ্যম হয়েছে ইউটিউব। এ সময়কার তরুণ তরুণীরা তাদের সার্বিক কাজের উপযুক্ত সমাধান বিবেচনা করেন youtube কে।কাজটি অত সহজ নয়। অল্প সময়ের ভিতরে সাইট থেকে আয় করা সম্ভব হয় না। ধৈর্য সহকারে লেগে থাকতে হয়। প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায়। একজন ভালো ইউটিউবার সরকারি চাকরিজীবী চাইতেও অধিক পরিমাণ আয় করেন।
ডে কেয়ারিং
দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি প্রতিষ্ঠানে একবার কর্মী নিয়োগ করা হয় যারা কি মাসিক চুক্তিভিত্তিক শর্তে কাজ করেন। ওসকল প্রতিষ্ঠানে দিনের বেলায় নির্দিষ্ট সময় কাজ করে পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো আয় করতে পারেন।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট
জন্মদিন, অন্নপ্রাশন, বিয়ে,পিকনিক কিংবা রাজনৈতিক সভা সেমিনারে খন্ডকালীনভাবে আপনি অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেন। ফুল-ফল ইত্যাদি দিয়ে সজ্জিত করার দায়িত্বে থাকতে পারেন।
সেলস পারসন
পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে পন্য বিক্রয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা
ব্যবসাটি চমৎকার উদ্যোগ। ব্যবসা করতে হলে আপনাকে উদ্যোক্তা হতে হবে। যদি আপনার সাহস না থাকে এবং আর্থিকভাবে লোকসান অথবা লাভের ব্যাপারে ধারণা থাকে তবেই কেবল ব্যবসায় যাওয়া উচিত। ছাত্র জীবনে অনেক ভাই বোন চিন্তা করে থাকেন ব্যবসা করবেন। কিন্তু কি ব্যবসা করবেন, কিভাবে করবেন এ নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকে। যদি আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা করবেন বলে চিন্তা করে থাকেন তবে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি যে সকল ব্যবসা করা যায় তার একটি পরিষ্কার ধারণা আলোচনা করা হলো।আপনার ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ইভেন্টে টি শার্ট অর্ডার নেয়া যায়। তাতে যোগাযোগ ভালো থাকলে মোটা অংকের লাভবান হওয়া যায়।
- ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবস্থাপনা সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান।
- কম্পিউটার কোচিং এন্ড টিচিং সেন্টার।
- খাদ্য ও পণ্য সরবরাহ।
- স্টেশনারী মালামাল সাপ্লাই।
- ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর ব্যবসা।
- শীতকালীন মধু, ঘি, বিশুদ্ধ সরিষার তেল ইত্যাদি ব্যবসা করতে পারেন।
- ক্যাম্পাসে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি, ভর্তি করানো, বিকাশ রকেট, ফ্লেক্সিলোড ইত্যাদি ব্যবসা করতে পারেন।সৌখিন হস্তশিল্প ইত্যাদি ব্যবসা করতে পারেন।
- পুরাতন মোবাইল, এসি, ফ্রিজ ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবসা করতে পারেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি
ছাত্র জীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি সামান্য কিছু আয় করে নিজের জীবন চালানো জরুরি। কেননা তাতে আত্মসম্মান বৃদ্ধি পায়।নির্ভরশীলতা কমে যায়, প্রতিষ্ঠা পাওয়ার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে থাকেন এ ধরনের চিন্তাভাবনার যারা। চলুন আলোচনার এরপর যায় জেনে নেওয়া যাক পড়াশোনার পাশাপাশি কি কি চাকরি করা যায়।
পার্ট টাইম জব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন চাকরি করার সুযোগ রয়েছে। দিনে দুই ঘন্টা অথবা সাপ্তাহিক কিছু সময় ব্যয় করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায়।
টিউশন ছাত্রাবস্থায় পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশন করলে আর্থিক অসচ্ছলতা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। এতে নিজের স্কিল বাড়ে, মাসের শেষে একটি অর্থ জীবনকে সাবলীল ও সুন্দর করে তোলে।
ট্রাভেল এজেন্সি পড়াশোনার পাশাপাশি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতে পারেন। ভ্রমন সম্পর্কিত নির্দেশনা দিয়ে ভালো আয় করা সম্ভব। তাছাড়া হজ্ব,চিকিৎসা, পর্যটন ইত্যাদি প্যাকেজ আপনার আর্থিক সংকট দূরীভূত করে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গুলোতে লোগো, টি শাট ডিজাইনিং ইত্যাদি করে পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো আয় করা সম্ভব ।
পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং
বর্তমানে কর্মসংস্থানের তুলনায় বেকারত্বের হার বাড়াই তরুণ প্রজন্মের নিকট ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টি জনপ্রিয়তা লাভ করছে। বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোতে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাওয়াই ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে ছাত্রদের আয়ের প্রধান উৎস। তাছাড়া দিনে সামান্য কিছু সময় দিলেই ভালো আয় করা সম্ভব।উন্নত রাষ্ট্রগুলো সময়ের মূল্যায়ন করে চলায় তারা অধিক সময় লাগে এমন কাজ অনুন্নত রাষ্ট্রগুলোর স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রীদের নিকট হতে চুক্তিভিত্তিক করে নিতে আগ্রহ দেখায়। পড়াশোনার খরচ জোগানো,সংসারের সাহায্য ইত্যাদি কাজে ফ্রিল্যান্সিং দারুন সাহায্য করে।
পড়াশোনার পাশাপাশি কি করা যায়
- অনেকে মনে করেন, পড়াশোনার পাশাপাশি কি কাজ করা সম্ভব? যদি সম্ভব হয় তাহলে কি কাজ করা উচিত হবে? তাহলে তাদের জন্য এ অনুচ্ছেদটি বিশেষভাবে লেখা হলো। নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পড়াশোনার পাশাপাশি আয়মূলক কাজে সম্পৃক্ত করতে আপনাকে দারুন ভাবে সাহায্য করবে।কনটেন্ট রাইটিং করতে পারেন।
- গ্রাফিক্স ডিজাইন।
- টিউশ।
- নার্সারি বা বাণিজ্য মেলাগুলো বইয়ের স্টল দিতে পারেন।
- শীতকালে সিজনাল খাবার যেমন আচার, মধু, ঘি, সরিষার তেল ইত্যাদি সরবরাহ করতে পারেন।পুরাতন পন্য সামগ্রী কয় বিক্রয়ের ব্যবসা করতে পারেন।
- ডে কেয়ারিং।
- রেস্টুরেন্টের ব্যবসা।
- ট্রাভেল এজেন্সি।
এ কাজগুলো আপনার পড়াশোনা পাশাপাশি আপনার আয়ের গতিকে আর বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। তাই পড়াশুনার পাশাপাশি আয় করতে চাইলে উপরিউক্ত কাজ করতে পারেন।
শিক্ষার্থীদের আয়ের উৎস কি
যদি আপনার লক্ষ্য স্থির থাকে যে, আপনি জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আয় করবেন তবে আপনার অনেক কিছু করবার আছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ব্যবসা কিংবা চাকরি উভয়ের মাধ্যমে সময় সমন্বয় করে আর্থিকভাবে উপকৃত হবার সুযোগ রয়েছে। যেমন ফ্রিল্যান্সিং, মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, রেস্টুরেন্ট ব্যবসা, ট্রাভেল এজেন্সি, নার্সারি বা গার্ডেনিং, সেলসম্যান, টিউশন, ড্রয়িং ক্লাস এমন নানা কাজের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের আয় করার সুযোগ আছে।
লেখকের মন্তব্য
সময় সমন্বয় করতে পারলে একসাথে পড়াশোনা ও উপার্জন উভয়ই চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। উন্নত রাষ্ট্রে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকলের দায়িত্ব নিজেই নিতে হয়। তাই দেখা যায় ভেতরে স্বাবলম্বী হবার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। তবে আমাদের দেশের ক্রমবর্ধমান বেকার জনসংখ্যা নির্ভরশীলতা কমাতে পড়াশোনার পাশাপাশি আয়মূলক কাজের ব্যবস্থা থাকা উচিত। আলোচনাটি ভালো লেগে থাকলে লাইক কমেন্ট করে আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
আরএম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url