কি কি কারণে কাপড় নাপাক হয়
মানুষের অতীব প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য সরঞ্জাম গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কাপড়।যা মৌলিক চাহিদার একটি।লজ্জা নিবারনের পাশাপাশি সৌখিন,মননশীল ও ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও প্রকাশে কাপড় অন্যতম।নানা কারনে এই কাপড় নাপাক হতে পারে।কাপড় নাপাক হলে মনের সন্তুষ্টি ও ইবাদত বন্দেগি সঠিকভাবে করা হয়ে ওঠে না।
নাপাক কাপড় ধোয়ার সময় পানির ছিটা
নাপাক মানে পাক নয় এমন।সুতরাং নাপাক কাপড়ের পানি মানে সেটিও নাপাক।নাপাক কাপড় ধৌত করার সময় খুব সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখা উচিত তা যেন অন্য কাপড়ে না লাগে।লাগলে সেটি ভালোভাবে কেচে নিতে হবে।তবে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পেতে গোসলের পূর্বে কাচা কুচি সেরে গোসল করে নেয়া বাঞ্ছনীয়।
পানির বালতির ভেতরে কাপড় ভিজিয়ে দিলে তা খুব বেশি ঘষামাজা করতে হয় না।ফলে দেখা যায় আলতোভাবে নাড়লে বেশি পরিষ্কার হয় এবং পানি ছিটানোর সম্ভাবনা থাকে না।এভাবে অধিক পরিষ্কারও হয় এবং পানি ছিটে অপরাপর কাপড়গুলো অপরিষ্কার হবার সম্ভাবনা থাকে না।
কি কি কারণে কাপড় নাপাক হয়
নানা কারণে কাপড় নাপাক হতে পারে। তন্মধ্যে প্রস্রাব ও পায়খানা দ্বারা বেশিরভাগ সময় হয়ে থাকে। তাছাড়া অযাচিত যৌন আচরণ যেমন স্বপ্নদোষ, হস্তমৈথুনের ন্যায় গর্হিত কাজের জন্য কাপড় নাপাক হয়।গবাদি পশুর মূত্র কিংবা অপরিচ্ছন্ন জায়গায় যাতায়াত অনেকাংশে দায়ী। উল্লেখিত উপরিউক্ত বিষয়ে সর্বাধিক কাপড় অপরিচ্ছন্ন হয়।
নাপাকি দূর করার উপায়
সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া উচিত। কেননা এর সাথে জড়িয়ে থাকে ব্যক্তির রুচি ও ইবাদতের বিষয়টি।নাপাক কাপড় দিয়ে ইবাদত গ্রহণযোগ্য নয়।ফলে সতর্কতার ক্ষেত্রে কোন আপেষকামিতার কোন সুযোগ নেই।মুত্র নিসৃত হবার পর সবচেয়ে বেশি কাপড় নাপাক হতে দেখা যায়।সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে প্রসাবে যাওয়া উচিত।
দেখা যায়,তাড়াহুড়া বশত প্রসাব করতে গেলে পুরুষের ক্ষেত্রে পরে ফোঁটা ফোঁটা আকারে নিসৃত হয় যা কাপড় নাপাকের জন্য দায়ী।তাছাড়া গৃহপালিত পশুপালনের সাথে যারা সম্পৃক্ত তারা অধিকাংশ সময় পশুমুত্র দ্বারা নাপাক হন।এই সকল সমস্যায় পতিত ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ দূরত্বে থেকে অথবা কয়েক সেট কাপড় রাখা উচিত।তাছড়া সাবান কিংবা ওয়াশিং পাউডার দ্বারা পরিষ্কার পানিতে ধৌত করার বিকল্প নেই।
কতিপয় উপায় বা সতর্কতা অবলম্বন করলে সবচেয়ে বেশি পবিত্রতা অর্জনের সম্ভাবনা থাকে।উক্ত বিষয়াবলি নিম্নে প্রদত্ত হলোঃ
- পরিষ্কার পানিতে দীর্ঘক্ষণ কাপড় ভিজিয়ে রাখতে হয়।তারপর ওয়াশিং পাউডার দ্বারা কিংবা সাবান দিয়ে কেঁচে নিতে পারেন।
- নোংরা ও অপরিষ্কার স্থান এড়িয়ে চলা।যদিও যেতে হয় তবে সম্ভব হলে গোসল করে নিতে পারেন।
- বদ অভ্যাস যেমন হস্তমৈথুনের অভ্যাস থাকলে দ্রুত পরিত্যাগ করা।নচেৎ নাপাকি থেকে পরিত্রানের সম্ভাবনা একেবারেই নেই।
- ব্যবহারের অব্যবহিত পরে অধিক নিশ্চিত হবার শর্তে সেগুলোকে তৎক্ষনাৎ পরিষ্কার করে রাখলে নির্ঝঞ্চাট থাকা যায়।
- যদি পোশাকের পরিবর্তে জায়গার নাপাকি দূর করতে হয় তাহলে অধিক পানি ঢেলে ও ব্যাপকভাবে মোছার মাধ্যমে তা করা উচিত।
নাপাক কাপড় পড়লে কি শরীর নাপাক হয়
হ্যাঁ শতভাগ।পোশাক শরীরের একটি অংশ। যেহেতু কাপড় শরীরের লজ্জা নিয়ন্ত্রণ করে তাই কাপড়কে শরীরের সমান অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একজন মানুষকে পোশাক সহ সম্পূর্ণ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইসলামী শরীয়তের ব্যাখ্যায়, পবিত্রতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।
এটা মানা হয় যে, অপরিষ্কার -অপরিচ্ছন্ন পোশাকে নামাজ হয় না। নাপাক কাপড় পরিধান করলে মনুষ্য সমাজে নিজেকে ছোট মনে হয়। তাছাড়া মানসিকভাবে দুর্বলতা ও হীনমন্যতা কাজ করে। নাপাক কাপড় পরিধান করলে রোগব্যাধি হবার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।
শরীর নাপাক থাকলে কি হয়
মানুষকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যার কারণে সকল প্রাণীর চাইতে মানুষের বুদ্ধি এবং আচরণে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করা প্রত্যেক মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। ধর্মীয়ভাবে পবিত্রতার উপর অতি জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয় প্রত্যেক কাজের শুরুতেই পবিত্র থাকা জরুরী।
সৃষ্টিকর্তা ও পারলৌকিক জীবন সম্পর্কে যারা বিশ্বাস করে তারা এটি উপলব্ধি করে যে পবিত্রতা ছাড়া কোন কাজই সম্ভব নয়। শরীর নাপাক থাকলে প্রথমত রোগ ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইবাদত বন্দেগি কবুল হতে চায় না। অন্তরে লোক-লজ্জা এবং হীনমন্যতার সৃষ্টি হয়। বৃদ্ধিজনিত সমস্যা হতে পারে।
নাপাক বিছানায় ঘুমানো যাবে
নাপাক হচ্ছে ঘৃণিত বা নিষিদ্ধ একটি বিষয়। এটিকে হারামের সমকক্ষ হিসেবে তুলনা করা হয়। সাধারণত ঘরের আসবাব গুলোর ভেতরে বিছানা অন্যতম যা পরিষ্কার থাকা বাঞ্ছনীয়। আমাদের বসবাসের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে আমাদের শোয়ার বেডরুম। সারাদিন এই ক্লান্তি শেষে যখন আমরা ঘুমোতে যাই তখন আমাদের বেডরুমটি আমাদের জন্য সর্বোচ্চ প্রশান্তি জায়গা হয়।
একটি নাপাক বিছানায় দুর্গন্ধ ছাড়ায় যা ঘুমের পথে অন্যতম অন্তরায়। বিছানা নাপাক থাকলে সেখানে শোয়ার ফলে নিজের জামা কাপড় নাপা হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই প্রথমত পবিত্র থাকতে চাইলেই বিছানাটি সর্বপ্রথমে পরিষ্কার রাখা দরকার। যেহেতু পরিচ্ছন্নতা আমাদের মনে প্রশান্তি অনেক তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করতে চাইলে শোবার বিছানাটি পরিষ্কার রাখার গুরুত্ব অপরিসীম।
আরএম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url